বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে মেইল পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে খিলাফত প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে মেইল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেইলটির স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন।
এক শিক্ষার্থী জানান, রাত ১২টায় হিজবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে খিলাফত প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে মেইল পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিশ্চিত করেছে জঙ্গি সংগঠনটি।
অভিযোগ রয়েছে, বুয়েটে নীরবে জঙ্গি কার্যক্রম বা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে হিবুজত তাহরীর। এর আগেও এই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক আউটলুক ইমেইলে পাঠানো হয় হিযবুত তাহরীরের ইমেইল। প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার বার্তা পাঠানো হলেও সর্বশেষ তথ্য অনুসারে সব শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ধরে একাধারে পাঠানো হয় এসব ইমেইল।
এ ছাড়াও বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসের ভেতরে বেশ কিছু স্থানে হিজবুত তাহরীর কিউআর কোডসহ তাদের জিহাদি বার্তার পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে; যা নিয়ে কোনো প্রতিবাদ বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
গত ২৯ মার্চ থেকে ফের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বুয়েটে আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলনের বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। যেখানে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই।
এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ২৮ মার্চ। ছাত্রলীগের সভাপতি বুয়েটে প্রবেশ করেছে এমন গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তার সঙ্গে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। তবে তাদের পক্ষ থেকে বুয়েটে জামায়াতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন শিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। পরে গণমাধ্যমে একপাক্ষিক আন্দোলন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে মৌলবাদী ছাত্র সংগঠন ও মৌলবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বুয়েটে ২০১৯ সালে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সোমবার (১ এপ্রিল) বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।
Leave a Reply